
প্রকাশিত: Tue, May 14, 2024 3:30 PM আপডেট: Sun, Jun 22, 2025 7:12 AM
ভালো ফলাফল দিয়ে আসলে কী হয়!
শারফিন শাহ
কিছুদিন আগে একজন বড়ভাইয়ের সঙ্গে কথা হচ্ছিলো। তিনি আক্ষেপ করে বলছিলেন, ভাবতে পার, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক প্রেম করে বেরিয়েছে, ভালো ফলও করেছে, ভালো চাকরিও পেয়েছে, তারা এখন কতো সংকীর্ণ মানসিকতার, কতো সাম্প্রদায়িক, কতো সংস্কৃতিহীন হয়ে পড়েছে। যেন সবই অর্জন করা হয়ে গেছে। যেন আর কিছুই করার নেই। সবকটাই আত্মাকেন্দ্রিক, স্বার্থপর ও গোঁড়া যন্ত্রে পরিণত হয়েছে। সাত বছর ধরে সরকারি চাকরি করে আমি যা বুঝি, তাতে নিজেকে মেলাতে পারি না। ভাইয়ের অভিজ্ঞতা সাত বছরের, কিন্তু আরও বেশি অভিজ্ঞতা আছে, এমন কজনের প্রতিক্রিয়াও ভিন্ন নয়। সুতরাং ভালো ফলাফল দিয়ে আসলে কী হয়। কিছুই না।
উনিশশতকের অধিকাংশ বাঙালি দ্বিতীয়, তৃতীয় বিভাগে পাস করে, সরকারি চাকরি করেও নিজেদের আপন কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত করেনি। আর এখনকার আমরা কী পরিমাণ চতুর আর স্বার্থবাদী তা জানার জন্য আপনাকে সুলুক সন্ধান করতে হবে না। হাতের কাছেই অঢেল দৃষ্টান্ত গড়াগড়ি খাচ্ছে। উনিশ শতকের বিখ্যাত সমাজ সংস্কারক, ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের শিক্ষক, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বন্ধু ও সহযোদ্ধা মদনমোহন তর্কালঙ্কার শিশুদের জন্য কিছু উপদেশাত্মক কবিতা লিখেছিলেন।
সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি/সারাদিন আমি যেন ভালো হয়ে চলি, পাখিসব করে রব রাতি পোহাইল/কাননে কুসুমকলি সকলি ফুটিল এসব কবিতা সবার পরিচিত। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচিত যে কবিতা সেটি হচ্ছে লেখাপড়া করে যেই। এ কবিতার লেখাপড়া করে যেই/গাড়ি ঘোড়া চড়ে সেই। এই লাইনটি সেই ছোট্টবেলা থেকে সবার মুখে শুনে আসছি। কিন্তু এটা যে পূর্ণ একটি কবিতা তা জেনেছি অনেক পরে। অথচ এই কবিতার প্রথম লাইনটাই যেন বেদবাক্য হয়ে গেছে সবার কাছে। কারণ লেখাপড়া করে গাড়িঘোড়ায় চড়তে হবে এটাই বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্ন। এজন্য এ কবিতার পরের লাইনগুলো আর কেউ বলে না। প্রকৃতপক্ষে লেখাপড়ার মূল উদ্দেশ্য পরের লাইনগুলোতেই পাওয়া যায়। লেখাপড়া যেই জানে/সব লোক তারে মানে/কটু ভাষী নাহি হবে/মিছা কথা নাহি কবে/পর ধন নাহি লবে/চিরদিন সুখে রবে/পিতামাতা গুরুজনে/সেবা কর কায় মনে।
একবার বুকে হাত দিয়ে বাঙালি বলুক লেখাপড়া করে তারা যতটা গাড়িঘোড়া মেরেছে ততোটা সর্বজন শ্রদ্ধেয়, নম্রভাষী, সত্যবাদী, নির্লোভ হতে পেরেছে কিনা! হবে কী করে, লেখাপড়া করে যে গাড়িঘোড়া চড়ে সে এটাই যে তাদের জীবনের মূলমন্ত্র হয়ে গেছে। লেখক: গবেষক ও প্রাবন্ধিক
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
